প্রোডাক্টিভিটি এবং লক্ষ্যে পৌঁছার তাগাদা
বিশেষজ্ঞদের মতে, সে সকল লােকেরাই জীবনে অধিক সফল যাদের মধ্যে লক্ষ্যে পৌঁছার তাগাদা থাকে এবং ভবিষ্যতের দীর্ঘ মেয়াদী লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বর্তমান মুহুর্তের সিদ্ধান্ত গ্রহণের দূরদৃষ্টি লালন করে। লক্ষ্যে পৌঁছার তাগাদা আমাদের একটি প্রেক্ষাপটে দাঁড় করিয়ে দেয়, চিন্তাকে দেয় সুনির্দিষ্ট বিন্যাস, সেই সাথে কাজেকর্মে, আচরণে একটি ফোকাস সেট করে দেয়। ফলে আপনার লক্ষ্যমুখি দূরদৃষ্টি যতটা স্বচ্ছ হয়, ফোকাডস অ্যাক্টিভিটির মাধ্যমে সাফল্য অর্জনও ততটা সহজ হয়ে ওঠে।
মানবজাতির প্রতি আল্লাহর অসীম দয়া যে তিনি মানুষ সৃষ্টির সাথে সাথে একটি দীর্ঘময়ােদী লক্ষ্য, চূড়ান্ত গন্তব্যও সেট করে দিয়েছেন। আমাদের লক্ষ্য—তাঁর সন্তুষ্টি, গন্তব্য—চিরস্থায়ী জান্নাত।
কল্পনা করুন তাে—আপনাকে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি একটা গাড়ি উপহার দেয়া হবে, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে গাড়ির হেডলাইটটি সাময়িক নষ্ট। রাতের অন্ধকারে গাড়িটি ড্রাইভ করে বাসায় ফিরতে হবে আপনাকে। এ অবস্থায় আপনি কি গাড়িটি চালানাের দুঃসাহস করবেন? আপনার রাস্তা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা, গাড়ি চালানাের দক্ষতা, শারীরিক সুস্থতা—এতগুলাে পাওয়ার হাউজ কি আপনাকে গাড়ি চালাতে উদবুদ্ধ করবে?
জাগতিক বা আধ্যাত্মিক যাই বলি না কেন—“লক্ষ্যে পৌঁছার তাগাদা’ ভূপৃষ্ঠে জীবিত সমস্ত কিছুর অন্তর্গত প্রেরণা। যার লক্ষ্যকেন্দ্রিক দৃষ্টি শরতকাশের মতাে উজ্জ্বল তার সাফল্য তারকার মতাে আলাে ঝলমল।
একজন প্রােডাক্টিভ মুসলিম বা মুসলিমাহ হিসেবে আল্লাহর সন্তুষ্টি, পরকালীন মুক্তি, জান্নাতের মনােরম বাগান—জীবনের এসকল অনিবার্য প্রত্যাশাগুলোর সাথে সঙ্গতি রেখে দুনিয়ার জীবনে আপনার কী কী চাওয়া রয়েছে, পরিবার, সমাজ, উম্মাহর জন্য যেসব করণীয় রয়েছে সেসবের লক্ষ্য ঠিক করুন এবং এই সেকশনের পরবর্তী নিদের্শনাগুলাে অনুসরণ করে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হােন। লক্ষ্য, পরিকল্পনা এবং বাস্তবমুখি উদ্যোগই কেবল পারে আপনাকে প্রােডাক্টিভ রাখতে।
লক্ষ্য যাচাই
আমাদের প্রথমেই নিজেদের জিজ্ঞাসা করে নেয়া দরকার যে, আমরা আত্মােন্নয়নে আগ্রহী কেন? আমাদের উদ্দেশ্য কী? আমাদের লক্ষ্যসমূহ কি মহৎ, নাকি স্বার্থপর? আমাদের লক্ষ্যসমূহ কি কেবলই পার্থিব, নাকি এর ব্যাপ্তি পরকালীন জীবন পর্যন্ত সুদূর বিস্তৃত? আমার আত্মােন্নয়নে কারা লাভবান হবেন—কেবলই আমি, নাকি সার্বিকভাবে উম্মাহ?
একজন প্রকৃত মুসলিম স্বার্থপর নয়, অথবা সে কেবল তার প্রবৃত্তির দ্বারা। পরিচালিত হতে পারে না। একজন মুসলিমের দৃষ্টি হবে বিস্তৃত এবং তার লক্ষ্য হবে—এই পৃথিবীকে সুন্দর করে গড়ে তােলা। যেকোনাে লক্ষ্য নির্ধারণে আমাদের এই নিচের শর্তসমূহ পূরণ করা উচিত:
লক্ষ্যটি অবশ্যই হালাল হতে হবে।লক্ষ্যটি অবশ্যই কল্যাণকর হতে হবে লক্ষ্যটি অবশ্যই কারাে জন্যে ক্ষতিকর হওয়া যাবে না।উত্তম লক্ষ্য হবে—উম্মাহর কল্যাণ ও উন্নয়নে কাজ করা, কমপক্ষে তা যেনাে হালাল হয় এবং ক্ষতিকর না হয়।
লক্ষ্য-নির্ধারণ হলাে আত্মােন্নয়নের ভিত্তি। একজন সফল ব্যক্তি আর একজন ব্যর্থ ব্যক্তি—দুজনের মাঝে মৌলিক পার্থক্য হলাে: একজনের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে, যে জন্যে সে নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করে। পক্ষান্তরে আরেকজনের কোনাে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে না, ফলে সে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করে।
লক্ষ্য নির্ধারণের অনেক বিষয় থাকতে পারে। যেমন- আদর্শ মুসলিম হওয়া, আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করা, উন্নত দেশের অভিবাসী হওয়া, কোনাে বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নেয়া, ক্যারিয়ারে পরিবর্তন আনা, শরীরের ওজন কমানাে, এমনকি ভালাে অভিভাবক হওয়া। মূলকথা— যতােটা সম্ভব। কোনাে একটি সুনির্দিষ্ট বিষয় অর্জনে লক্ষ্য নির্ধারণ করা এবং তা বাস্তবায়নের জন্যে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা।
প্রােডাক্টিভ লক্ষ্য যাচাইয়ে যে দিকগুলাে বিবেচনায় থাকা চাই
১। আমাদের যেকোনাে লক্ষ্য জীবনের চূড়ান্ত উদ্দেশের সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
২। লক্ষ্যটি এমন বিষয়ে নির্ধারণ করা উচিত যেটার প্রতি আমার ভালাে লাগা কাজ করে, একই সাথে জিনিসটা হালাল।
৩। ভালাে লাগার ক্ষেত্রটাও এমন হওয়া চাই যেটাতে আমার আত্মবিকাশের সর্বোচ্চ সম্ভবনা থাকে।
৪। প্রতিটি হালাল লক্ষ্য অর্জরে পেছনে মূল প্রেরণা উচিত আল্লাহর সন্তুষ্টি।
৫। লক্ষ্যটি অবশ্যই কারাে জন্যে ক্ষতিকর হওয়া যাবে না।
৬। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত স্বার্থপরতামুক্ত এবং মানবতার কল্যাণে নিবেদিত।
৭। প্রতিটি লক্ষ্য এমন হওয়া উচিত যেন দুনিয়ার জীবন ও জান্নাতের | জীবনের মাঝে সেতুবন্ধনসরূপ কাজ করে।
৮। মৃত্যুর পরও আমাদের লক্ষ্য আমাদের জন্য সাদকায়ে জারিয়া হয় কিনা সেটার দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া।
লক্ষ্য নির্ধারণের পদ্ধতি কার্যকর লক্ষ্য-নির্ধারণের চাবিকাঠি হলাে: সুনির্দিষ্ট, বাস্তবসম্মত, অর্জনযােগ্য হওয়া এবং আপনার লক্ষ্যসমূহ অর্জনের জন্যে একটি সময়সীমা বেঁধে নেয়া। এজন্য বহুলপ্রচলিত লক্ষ্য নিধারণের মডেলটি হলাে: স্মার্ট গােল (SMART goals)।
স্মার্ট গােল (SMART goals)-এর ব্যাখ্যা।
S Specific সুনির্দিষ্ট – যতােটা সম্ভব সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।
M Measurable – পরিমাপযােগ্য ফলাফল পরিমাপ করা যায়, এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন ৷
A Attainable অর্জনযােগ্য – অর্জন করা যায় এমন এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন ৷
R Realistic বাস্তবসম্মত – বাস্তবসম্মত ফলাফল নির্ধারণ করুন, যা আপনি অর্জন করতে চান।
T Timed সময়-নির্ধারিত – নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করুন।
নন-স্মার্ট গােল ও স্মার্ট গোলের দৃষ্টান্ত
আদর্শ লক্ষ্য নির্ধারণের (SMART goal) উল্লিখিত বৈশিষ্টসমূহ পূরণ হয়নি, এমন একটি লক্ষ্য নির্ধারণের উদাহরণ হলাে: আমি শরীরের অনেকটা ওজন কমাতে ইচ্ছুক।
লক্ষ্যটি সুনির্দিষ্ট নয়: কারণ কতটুকু ওজন? স্বাস্থােজ্জ্বলের সংজ্ঞা কী? তা লক্ষ্যটিতে অনুপস্থিত।
লক্ষ্যটি পরিমাপযােগ্য নয়: কারণ বর্তমান ওজন কতটুক? কতটুকু কমাতে হবে লক্ষ্যটিতে উল্লেখ নেই।
লক্ষ্যটি অর্জনযােগ্য নয়: কারণ লক্ষ্যটিতে কোনােকিছুই সুনির্দিষ্ট নয়।
লক্ষ্যটি সময়-নির্ধারিত নয়: কারণ কতটুকু সময়ের ব্যবধানে এটি বাস্তবায়িত লক্ষ্যটিতে অনুপস্থিত।
অন্যদিকে স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণের দৃষ্টান্ত হলাে:
আমার বর্তমান ওজন ১০০ কেজি, নিয়মমাফিক খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাধ্যমে আমি আগামী ৩ মাসের মধ্যে ৩০ কেজি ওজন কমাতে চাই। কেউ কেউ তাদের লক্ষ্যসমূহ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করে। তাদের লক্ষ্যসমূহের বৈশিষ্ট্য: সহজ, সুনির্দিষ্ট, পরিমাপযােগ্য, অর্জনযােগ্য, বাস্তবসম্মত ও সময়-নির্ধারিত। একজন মুসলিম হিসেবে আমরা জীবনে এমন কোনাে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারি না, যাতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হােন; অথবা এমন কোনাে ধর্মীয় কাজ করতে পারি না,যার উদ্দেশ্য হয় লােক-দেখানাে। আমাদের লক্ষ্যসমূহ কেবল স্মার্টই হবে না; বরং তা বিশুদ্ধ নিয়্যাত, একনিষ্ঠতা ও নৈতিকতার দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে।
মানবজাতির প্রতি আল্লাহর অসীম দয়া যে তিনি মানুষ সৃষ্টির সাথে সাথে একটি দীর্ঘময়ােদী লক্ষ্য, চূড়ান্ত গন্তব্যও সেট করে দিয়েছেন। আমাদের লক্ষ্য—তাঁর সন্তুষ্টি, গন্তব্য—চিরস্থায়ী জান্নাত।
কল্পনা করুন তাে—আপনাকে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি একটা গাড়ি উপহার দেয়া হবে, কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে গাড়ির হেডলাইটটি সাময়িক নষ্ট। রাতের অন্ধকারে গাড়িটি ড্রাইভ করে বাসায় ফিরতে হবে আপনাকে। এ অবস্থায় আপনি কি গাড়িটি চালানাের দুঃসাহস করবেন? আপনার রাস্তা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা, গাড়ি চালানাের দক্ষতা, শারীরিক সুস্থতা—এতগুলাে পাওয়ার হাউজ কি আপনাকে গাড়ি চালাতে উদবুদ্ধ করবে?
জাগতিক বা আধ্যাত্মিক যাই বলি না কেন—“লক্ষ্যে পৌঁছার তাগাদা’ ভূপৃষ্ঠে জীবিত সমস্ত কিছুর অন্তর্গত প্রেরণা। যার লক্ষ্যকেন্দ্রিক দৃষ্টি শরতকাশের মতাে উজ্জ্বল তার সাফল্য তারকার মতাে আলাে ঝলমল।
একজন প্রােডাক্টিভ মুসলিম বা মুসলিমাহ হিসেবে আল্লাহর সন্তুষ্টি, পরকালীন মুক্তি, জান্নাতের মনােরম বাগান—জীবনের এসকল অনিবার্য প্রত্যাশাগুলোর সাথে সঙ্গতি রেখে দুনিয়ার জীবনে আপনার কী কী চাওয়া রয়েছে, পরিবার, সমাজ, উম্মাহর জন্য যেসব করণীয় রয়েছে সেসবের লক্ষ্য ঠিক করুন এবং এই সেকশনের পরবর্তী নিদের্শনাগুলাে অনুসরণ করে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগী হােন। লক্ষ্য, পরিকল্পনা এবং বাস্তবমুখি উদ্যোগই কেবল পারে আপনাকে প্রােডাক্টিভ রাখতে।
লক্ষ্য যাচাই
আমাদের প্রথমেই নিজেদের জিজ্ঞাসা করে নেয়া দরকার যে, আমরা আত্মােন্নয়নে আগ্রহী কেন? আমাদের উদ্দেশ্য কী? আমাদের লক্ষ্যসমূহ কি মহৎ, নাকি স্বার্থপর? আমাদের লক্ষ্যসমূহ কি কেবলই পার্থিব, নাকি এর ব্যাপ্তি পরকালীন জীবন পর্যন্ত সুদূর বিস্তৃত? আমার আত্মােন্নয়নে কারা লাভবান হবেন—কেবলই আমি, নাকি সার্বিকভাবে উম্মাহ?
একজন প্রকৃত মুসলিম স্বার্থপর নয়, অথবা সে কেবল তার প্রবৃত্তির দ্বারা। পরিচালিত হতে পারে না। একজন মুসলিমের দৃষ্টি হবে বিস্তৃত এবং তার লক্ষ্য হবে—এই পৃথিবীকে সুন্দর করে গড়ে তােলা। যেকোনাে লক্ষ্য নির্ধারণে আমাদের এই নিচের শর্তসমূহ পূরণ করা উচিত:
লক্ষ্যটি অবশ্যই হালাল হতে হবে।লক্ষ্যটি অবশ্যই কল্যাণকর হতে হবে লক্ষ্যটি অবশ্যই কারাে জন্যে ক্ষতিকর হওয়া যাবে না।উত্তম লক্ষ্য হবে—উম্মাহর কল্যাণ ও উন্নয়নে কাজ করা, কমপক্ষে তা যেনাে হালাল হয় এবং ক্ষতিকর না হয়।
লক্ষ্য-নির্ধারণ হলাে আত্মােন্নয়নের ভিত্তি। একজন সফল ব্যক্তি আর একজন ব্যর্থ ব্যক্তি—দুজনের মাঝে মৌলিক পার্থক্য হলাে: একজনের একটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে, যে জন্যে সে নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করে। পক্ষান্তরে আরেকজনের কোনাে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে না, ফলে সে অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করে।
লক্ষ্য নির্ধারণের অনেক বিষয় থাকতে পারে। যেমন- আদর্শ মুসলিম হওয়া, আর্থিক সচ্ছলতা অর্জন করা, উন্নত দেশের অভিবাসী হওয়া, কোনাে বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী নেয়া, ক্যারিয়ারে পরিবর্তন আনা, শরীরের ওজন কমানাে, এমনকি ভালাে অভিভাবক হওয়া। মূলকথা— যতােটা সম্ভব। কোনাে একটি সুনির্দিষ্ট বিষয় অর্জনে লক্ষ্য নির্ধারণ করা এবং তা বাস্তবায়নের জন্যে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা।
প্রােডাক্টিভ লক্ষ্য যাচাইয়ে যে দিকগুলাে বিবেচনায় থাকা চাই
১। আমাদের যেকোনাে লক্ষ্য জীবনের চূড়ান্ত উদ্দেশের সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।
২। লক্ষ্যটি এমন বিষয়ে নির্ধারণ করা উচিত যেটার প্রতি আমার ভালাে লাগা কাজ করে, একই সাথে জিনিসটা হালাল।
৩। ভালাে লাগার ক্ষেত্রটাও এমন হওয়া চাই যেটাতে আমার আত্মবিকাশের সর্বোচ্চ সম্ভবনা থাকে।
৪। প্রতিটি হালাল লক্ষ্য অর্জরে পেছনে মূল প্রেরণা উচিত আল্লাহর সন্তুষ্টি।
৫। লক্ষ্যটি অবশ্যই কারাে জন্যে ক্ষতিকর হওয়া যাবে না।
৬। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত স্বার্থপরতামুক্ত এবং মানবতার কল্যাণে নিবেদিত।
৭। প্রতিটি লক্ষ্য এমন হওয়া উচিত যেন দুনিয়ার জীবন ও জান্নাতের | জীবনের মাঝে সেতুবন্ধনসরূপ কাজ করে।
৮। মৃত্যুর পরও আমাদের লক্ষ্য আমাদের জন্য সাদকায়ে জারিয়া হয় কিনা সেটার দিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া।
লক্ষ্য নির্ধারণের পদ্ধতি কার্যকর লক্ষ্য-নির্ধারণের চাবিকাঠি হলাে: সুনির্দিষ্ট, বাস্তবসম্মত, অর্জনযােগ্য হওয়া এবং আপনার লক্ষ্যসমূহ অর্জনের জন্যে একটি সময়সীমা বেঁধে নেয়া। এজন্য বহুলপ্রচলিত লক্ষ্য নিধারণের মডেলটি হলাে: স্মার্ট গােল (SMART goals)।
স্মার্ট গােল (SMART goals)-এর ব্যাখ্যা।
S Specific সুনির্দিষ্ট – যতােটা সম্ভব সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন।
M Measurable – পরিমাপযােগ্য ফলাফল পরিমাপ করা যায়, এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন ৷
A Attainable অর্জনযােগ্য – অর্জন করা যায় এমন এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করুন ৷
R Realistic বাস্তবসম্মত – বাস্তবসম্মত ফলাফল নির্ধারণ করুন, যা আপনি অর্জন করতে চান।
T Timed সময়-নির্ধারিত – নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করুন।
নন-স্মার্ট গােল ও স্মার্ট গোলের দৃষ্টান্ত
আদর্শ লক্ষ্য নির্ধারণের (SMART goal) উল্লিখিত বৈশিষ্টসমূহ পূরণ হয়নি, এমন একটি লক্ষ্য নির্ধারণের উদাহরণ হলাে: আমি শরীরের অনেকটা ওজন কমাতে ইচ্ছুক।
লক্ষ্যটি সুনির্দিষ্ট নয়: কারণ কতটুকু ওজন? স্বাস্থােজ্জ্বলের সংজ্ঞা কী? তা লক্ষ্যটিতে অনুপস্থিত।
লক্ষ্যটি পরিমাপযােগ্য নয়: কারণ বর্তমান ওজন কতটুক? কতটুকু কমাতে হবে লক্ষ্যটিতে উল্লেখ নেই।
লক্ষ্যটি অর্জনযােগ্য নয়: কারণ লক্ষ্যটিতে কোনােকিছুই সুনির্দিষ্ট নয়।
লক্ষ্যটি সময়-নির্ধারিত নয়: কারণ কতটুকু সময়ের ব্যবধানে এটি বাস্তবায়িত লক্ষ্যটিতে অনুপস্থিত।
অন্যদিকে স্মার্ট লক্ষ্য নির্ধারণের দৃষ্টান্ত হলাে:
আমার বর্তমান ওজন ১০০ কেজি, নিয়মমাফিক খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের মাধ্যমে আমি আগামী ৩ মাসের মধ্যে ৩০ কেজি ওজন কমাতে চাই। কেউ কেউ তাদের লক্ষ্যসমূহ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করে। তাদের লক্ষ্যসমূহের বৈশিষ্ট্য: সহজ, সুনির্দিষ্ট, পরিমাপযােগ্য, অর্জনযােগ্য, বাস্তবসম্মত ও সময়-নির্ধারিত। একজন মুসলিম হিসেবে আমরা জীবনে এমন কোনাে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে পারি না, যাতে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হােন; অথবা এমন কোনাে ধর্মীয় কাজ করতে পারি না,যার উদ্দেশ্য হয় লােক-দেখানাে। আমাদের লক্ষ্যসমূহ কেবল স্মার্টই হবে না; বরং তা বিশুদ্ধ নিয়্যাত, একনিষ্ঠতা ও নৈতিকতার দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত হবে।